গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বসতবাড়ির উঠানে পুকুর কাটা শুরু করেছে প্রতিপক্ষ। ইতিমধ্যে তারা উঠান থেকে এক ফুটেরও বেশি গভীর করে মাটি তুলে নিয়ে গেছে। বসতঘরের মূল ভিত পর্যন্ত কেটে নিয়ে যাওয়ায় গোটা উঠান জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে গভীর ডোবা। ফলে ঘরের বাইরে পা-ও ফেলতে পারছেন না ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় পরিবারটি।
প্রতিপক্ষের আগ্রাসী মনোভাবে তারা ভুগছেন নিরাপত্তাহীনতায়। এ ঘটনা চলছে টুঙ্গিপাড়ার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের লেবুতলা মধ্যপাড়া এলাকার গাইন বাড়িতে।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটির অভিভাবক দ্বিজেন গাইন (৮০) সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, তারই প্রতিবেশী মলিনা বিশ্বাস (৪০) মাসখানেক আগে হঠাৎ করেই লোকজন নিয়ে এসে নিজের জায়গা দাবী করে তার উঠানের এক পসলা মাটি কেটে নিয়ে যায়। বাঁধা দিতে গেলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমক্লি-ধমকিসহ মারতে উদ্যত হয়।
এ নিয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ এসে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তা সত্ত্বেও গত ২৯ জুলাই ও ২ আগস্ট দু’দফায় এসে আবারও তারা মাটি কেটে নিয়ে যায়।
দ্বিজেন গাইন আরও জানান, তার এ বসতভিটায় প্রায় দু’শ বছর আগে ঘর তোলেন তারই পিতামহ রামতনু গাইন। এরপর তার দাদু কুটিশ্বর গাইন, এরপর তার পিতা কেশব লাল গাইন এবং বর্তমানে তিনি তার দু’সন্তান, পুত্রবধু ও শারীরিক প্রতিবন্ধী নাতি নিয়ে বসবাস করছেন। হঠাৎ করেই প্রতিবেশী মলিনা বিশ্বাস উশৃঙ্খল লোকজন নিয়ে তার বসতবাড়ি অবৈধ দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
যে কারণে তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
বিষয়টি নিয়ে মলিনা বিশ্বাস বলেছেন, তার স্বামী ও সন্তানরা কেরালায় থাকেন। শুধুমাত্র বড় মেয়ের জামাইটাকে নিয়ে তিনি এখানে বসত করেন। তিনিও থানায় অভিযোগ করেছেন। থানার ওসি সাহেব দু’পক্ষকেই থানায় ডেকেছিলেন; কিন্তু ওই পক্ষের কেউ হাজির হয়নি। পরে ওসি সাহেব আমাকে আমার জায়গায় কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমার ওই জায়গায় এখন আমি পুকুর কাটবো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনার পিছনে এলাকার একটি ভূমিদস্যু চক্র রয়েছে; যারা নিজেদেরকে আড়ালে রেখে ওই দু’ প্রতিবেশীর মধ্যে এভাবে বিশৃঙ্খলা ও গন্ডগোলের সৃষ্টি করছে। এ চক্রটিই ভবিষ্যতে দু’ পক্ষের জমি নিয়ে নেবে।
এ ব্যাপারে টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি এ.কে.এম এনামুল হক মোবাইল ফোনে বলেন, কারও জমিতে কাজ করার বা বাড়ির উঠানে পুকুর কাটার নির্দেশ আমি দেইনি। মলিনা বিশ্বাস সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করেছে। তবে, সেখানে যা’তে কোন ধরণের আইন-শঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে, সেটা আমি নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। তাদেরকে বলেছি, কাগজপত্র যার – জমি তার। এজন্য আইন আছে, আদালত আছে। আদালতই এর সুরাহা করতে পারবে। কিন্তু তা না করে কেউ যদি আইন নিজ হাতে তুলে নিতে চায় তো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।